ফিচার ডেস্ক:
সবসময়ই ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’ আমাদের। আমরা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারি না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অতীত অভিজ্ঞতা অনেক সাহায্য করে। অনেক সময় আফসোস করি, অনুতপ্ত হই- অনেক ভুলের কারণে। যদি আগে জানা থাকতো বিষয়টি, তবে ভুলটি হতো না। সে সম্পর্ককেই বিস্তারিত জানাচ্ছেন মেহেদী শামীম

অনেক সময় সহকর্মীর সঙ্গে ‘নির্দোষ ভুলে’র কারণে আমাদের অনেক মাশুল দিতে হয়। আর তাই কিছু বিষয় মাথায় রাখলে এসব ভুল এড়িয়ে যাওয়া যায়-

১. যখন কেউ নতুন কোন কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে। নতুন জায়গায় সবাইকে খালিচোখে দেখতে খুব ভালো মনে হলেও আসলে সবাই একরকম নয়। অফিসে অনেক সহকর্মী থাকেন; যারা সামনে একরকম ব্যবহার করেন, কিন্তু পেছনে ঠিক উল্টো। আর তাই সবাইকে সবসময়, সবজায়গায় বিশ্বাস করে নিজের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো শেয়ার করা ঠিক নয়। কারণ ওই বিষয়গুলোই হয়তো আপনার দুর্বলতার কারণ হতে পারে।

২. প্রত্যেক মানুষেরই গোপন কথা থাকে। আর সেই কথাগুলো খুব কাছের বন্ধুর কাছে বলতে পারেন, কিন্তু কখনোই আপনার সহকর্মীর কাছে বলা ঠিক হবে না। কারণ অফিসে কখন কী হয়, আপনি জানেন না। যখন-তখন যে কেউ আপনাকে নীচু করার জন্য অথবা প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য আপনার ক্যারিয়ারে বিপর্যয় নামতে পারে।

৩. কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য এবং ভালো বেতন পাওয়ার লোভে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কাজ করে। কারো কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কঠোর পরিশ্রম করা এবং স্রোতের সঙ্গে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াটা সফলতা দিতে পারে না। সফলতা তখনই আসে; যখন আপনি প্রকৃত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।

৪. আপনাকে সহজ এবং কার্যকরী হতে হবে। অন্যের কাথা চালাচালি করে কখনোই কেউ জনপ্রিয় হতে পারে না। কাজ দিয়ে আপনার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।

৫. তরুণদের সবসময় মাথায় রাখতে হবে, কখনোই এক জায়গায় লেগে থাকা যাবে না। ছড়িয়ে পড়তে হবে এবং সব ধরনের কাজের সাথে নিজেকে জড়াতে হবে, যেই কাজগুলো আপনার দখলে আছে। কারণ নিজেকে বিভিন্ন জিনিসের সাথে সংযুক্ত করলে বুঝতে পারবেন আপনার দক্ষতার মাপকাঠি। যখন এন্ট্রি লেভেল থেকে পরের ধাপে যাবেন তখন একটি বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবেন। তবে প্রথমদিকে অবশ্যই সবকিছুর সাথে সংযুক্ত হলে আপনার ভবিষ্যতের কাজ সহজতর হবে।

৬. ক্যারিয়ারের শুরুতে বেতনের পেছনে দৌঁড়ানো ভালো কাজ নয়। এ সময়ে খুঁজতে হয়, কোন কাজে আপনি দক্ষ এবং কোন কাজের মধ্যে আপনার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি যদি কোনো কাজে দক্ষ হন; তবে সেখানেই কাজ করার চেষ্ঠা করুন, সফলতা আসবেই। শুরুর দিকে একটু পরিশ্রম হলেও ভবিষ্যতে এটা কাজে আসবে।

৭. সবসময় জানার চেষ্টা করবেন, আপনার সহকর্মীরা আপনাকে নিয়ে কী ভাবছে? তাদের ভাবনাগুলো আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলো আপনার দক্ষতা এবং অদক্ষতার ব্যাপারে সজাগ করবে। তখন আপনি চাইলেই আপনার দক্ষতা বাড়াতে কাজ করতে পারবেন।

৮. সহকর্মীর সঙ্গে সাবধানে সোশ্যাল মিডিয়াতে যোগাযোগ করবেন। কারণ প্রতিটি জিনিসই ডকুমেন্ট হিসেবে থেকে যায়। যখন-তখন এগুলো ফ্ল্যাশ হয়ে যেতে পারে। আর যদি আপনি বসের বিষয়ে কোনো কথা বলে ফেলেন; তবে তার কারণে আপনার চাকরিও চলে যেতে পারে।

৯. তরুণদের উচিত বিভিন্ন ইভেন্ট-পার্টিতে যাওয়া। অফিসে বসে না থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গেলে অথবা কাজের জন্য বাইরে গেলে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে। বিভিন্ন ইভেন্টে গেলে নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা হবে, শিখতে পারবেন নতুন কিছু এবং অনুপ্রাণিত হতে পারবেন বিভিন্ন বিষয়ে। তাই অফিসের ডেস্কে বসে পার করে দেবেন না চাকরি জীবন।

১০. ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একটি কথা মাথায় রাখতে হবে। অফিসের কাজ অফিসে এবং বাসায় এসে শুধু নিজের জীবন উপভোগ করা উচিত। কখনোই অফিসের কাজ অথবা চিন্তা নিয়ে বাসায় ফেরা ভালো কাজ নয়। এতে আপনার জীবন হয়ে উঠবে কষ্টের।